অনেকের দেখা যায় হঠাৎ করেই চোখের পাতা কাঁপতে থাকে। এটি নিয়ে নানারকম বিশ্বাস প্রচলিত রয়েছে। কেউ কেউ বলেন, বাম চোখের পাতা লাফানো নাকি আসন্ন বিপদের ইঙ্গিত দেয়। আর তাই এমনটা হলে অনেকেই দুশ্চিন্তায় থাকেন

আবার বলা হয়, নারীদের ডান চোখের পাতা লাফানো অশুভ। পুরুষের ক্ষেত্রে এটি মনের ইচ্ছে পূরণ হওয়ার ইঙ্গিত। চোখের পাতা কাঁপা (Eye Twitching) বা লাফানো নিয়ে নানারকম বিধান প্রচলিত রয়েছে। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষ্য ভিন্ন। বিশেষজ্ঞরা এই ব্যাপারটিকে শারীরিক সমস্যা হিসেবেই দেখেন। চোখের পাতা লাফানোর

কারণ কী? চলুন জেনে নেওয়া যাক-

অতিরিক্ত স্ট্রেস

বিশেষজ্ঞদের মতে, চোখের ওপর অতিরিক্ত স্ট্রেস পড়লে এমনটা ঘটে থাকে। বর্তমান যুগে বেশিরভাগ মানুষই কম্পিউটার আর মোবাইলের ওপর নির্ভরশীল। ফলে দীর্ঘ সময় চোখের ওপর ডিজিটাল পর্দার আলো পড়ে। যা থেকে চোখের পাতা কাঁপার ঘটনা ঘটে।

কম ঘুম

পরিমিত ঘুম না হলে চোখের পাতা লাফাতে পারে। কারণ, ঘুম শরীরের স্ট্রেস দূর করে। দীর্ঘ সময় ধরে জেগে থাকলে চোখের পাতা কাঁপতে থাকে।

অ্যালার্জি

কোনো নির্দিষ্ট বস্তুতে অ্যালার্জি থাকলে তার থেকেও এমন ঘটনা ঘটতে পারে। বস্তুটি চোখের আশেপাশে থাকলে চোখের পাতা স্বাভাবিকভাবে লাফিয়ে চোখকে সুরক্ষিত রাখতে চেষ্টা করে।

ধূমপান

চোখের পাতা লাফানোর একটি স্বাভাবিক কারণ ধূমপান বা মদ্যপান। চিকিৎসার পরিভাষায় এই সমস্যাকে মায়কোমিয়া বলা হয়। প্রতিদিন অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যাফেইনজাতীয় তরল পান করলেও মায়কোমিয়ার উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

চোখের পাতা লাফালে করণীয়

জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনার মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়। প্রয়োজনের তুলনায় বেশিক্ষণ ডিজিটাল পর্দার সামনে না থাকাই ভালো। কাজের ফাঁকে মাঝেমধ্যে চোখকে বিশ্রাম দিন। এতে চোখ ক্লান্ত হয় না। ক্যাফেইন জাতীয় তরল পানের পরিমাণ কমান। তার বদলে পান করতে পারেন তাজা ফলের রস। কিছু কিছু খাবার চোখের জন্য উপকারি। সেগুলো খাদ্যতালিকায় রাখুন। ধূমপান ও মদ্যপানের স্বভাব বাদ দিলে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। সেই সঙ্গে পরিমিত ঘুমও জরুরি।

কখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত?

দিনে দুই থেকে তিনবার চোখের পাতা লাফানো স্বাভাবিক। তবে এর বেশি হলে বুঝতে হবে শরীরের কোথাও সমস্যা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। চোখ লাল হয়ে গেলে বা ফুলে গেলে ডাক্তারের কাছে যান।

এছাড়া, লাফানোর আগে চোখ থেকে অতিরিক্ত পানি ঝরলে সতর্ক হোন। চোখ অতি সংবেদনশীল অঙ্গ। প্রচলিত ধারণায় বিশ্বাস না করে সঠিক সময়ে চোখের যত্ন নিন।